সোমবার, ১৭ মার্চ ২০২৫, ১২:২৫ অপরাহ্ন
বরিশাল সিট করপোরেশনের (বিসিসি) বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমানসহ তিন জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বাকী দু’জন হলো বাজার সুপারিনটেনডেন্ট মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম ও ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ আজিজুর রহমান। সাময়িক বরখাস্ত হওয়ার আগে এদের তিনজনকেই কর্তৃপক্ষ নিজ দফতর থেকে সরিয়ে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত করেছিলেন।
এদিকে কর্তৃপক্ষের নোটিশের জবাব না দেয়ায় দ্বিতীয় বারের মতো সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ আহসান উদ্দিন রোমেলকে দ্বিতীয় বার কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানাগেছে, বাজেট কাম হিসাব রক্ষন কর্মকর্তা মোঃ মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে নিজ পদে থাকাকালীন সময়ে অর্থ দফতরে প্রভাব খাটিয়ে উচ্চতর স্কেল গ্রহন, বেতনের সাথে তারতম্য বিহীন অর্থ আয় ও নামে-বেনামে একাউন্ট খুলে করপোরেশনের অর্থের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিরমতো গুরুত্বর অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া তার বিরুদ্ধে দর্নীতি দমন কমিশনে জ্ঞাত বহির্ভূত আয়ের অভিযোগও রয়েছে।
অপরদিকে বাজার সুপারিনটেনডেন্ট মুহাম্মদ নুরুল ইসলানের বিরুদ্ধে নিজ পদে কর্তব্যকালীন সময়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বরাদ্দবিহীন অনেক স্টল কর্তৃপক্ষের অগোচরে নিজ ইচ্ছায় জনসাধারণের কাছে ভাড়া দিয়ে ভাড়ার টাকা অবৈধভাবে গ্রহন করে আত্মসাৎ এবং অনেক গ্রাহকের কাছ থেকে উৎকোচ গ্রহন করে স্টল বরাদ্দ দিয়েছেন তিনি।
এছাড়া ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট মোঃ আজিজুর রহমানের বিরুদ্ধে বাজার সুপারিনটেনডেন্ট পদে থাকাকালীন সময়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত না করে বিভিন্ন নামে ও বেনামে সিটি করপোরেশনের একাধিক স্টল বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া নিজ পদ (ট্রেড লাইসেন্স সুপারিনটেনডেন্ট) এ থাকাকালীন সহায়ক কর্মচারীকে দূর্নীতিতে উদ্বুদ্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন মোঃ আজিজুর রহমান। পাশাপাশি ওই অবৈধ কাজ না করা হলে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করার হুমকী প্রদর্শনসহ গ্রাহকের কাছ থেকে টানা এনে হয়রানীও করছেন তিনি।
আর কর্তৃপক্ষ মনে করে এই তিনজনের কর্মকান্ডে সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি অনেকাংশে ক্ষুন্নসহ আর্থিক ক্ষতিসাধন হয়েছে। তাই তাদের তিনজনকেই চাকুরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে বিধিমালার ৪৪(১) ধারা মোতাবেক বরখাস্তকালীন সময়ে তিনজনেই খোরাকীভাতা প্রাপ্য হবেন।
এদিকে সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ইসরাইল হোসেন সাক্ষরিত অফিস আদেশ সূত্রে জানাগেছে, বরখাস্তের পাশাপাশি ওই তিনজনের বিরুদ্ধে কেন বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হবে না, সেইমর্মে পত্র প্রাপ্তির ৭ কার্যদিবসের কর্তৃপক্ষ বরাবর জবাব দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে সিটি করপোরেশনের সাবেক জনসংযোগ কর্মকর্তা মোঃ আহসান উদ্দিন রোমেল যিনি বর্তমানে প্রশাসনিক শাখায় বিশেষ কর্মে নিযুক্ত রয়েছেন তাকে দ্বিতীয় বার কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
জানাগেছে, মোঃ আহসান উদ্দিন রোমেল জনসংযোগ কর্মকর্তা পদে কর্মরত না থেকে প্রশাসনিক শাখায় সংযুক্ত থাকলেও তথ্য গোপন রেখে মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে তথ্য কমিশনের শুনানীতে উপস্থিত থাকার জন্য ঢাকা গমনের অফিস আদেশ সাক্ষর করিয়েছেন। যা কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে সম্প্রতি কেন তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না সে বিষয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ করেছিলেন এবং সেই নোটিশের জবাব পত্র প্রাপ্তির তিন কার্যদিবসের মধ্যে দেয়ার কথা থাকলেও তা করেননি মোঃ আহসান উদ্দিন রোমেল।
এ অপরাধের কারনে কেন সাবেক এই জনসংযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে না, তার জবাব পত্র প্রাপ্তির ৩ কার্যদিবসের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে।
এসব তথ্যের সত্যতা জনসংযোগ কর্মকর্তা বেলায়েত হাসান বাবলু নিশ্চিত করেছেন।